২১ শে ফেব্রুয়ারী

২১ শে ফেব্রুয়ারী 


আমি মোঃ শাহিন সরদার এই ছবিতা আমি আমার পুরনো কলেজ এ তুলেছিলাম কোন একদিন আজকে আপনাদের কিছু কথা বলব জানি না আপনাদের ভাল লাগবে নাকি খারাপ লাগবে ।
আমি দেখেছি একুশে ফেব্রুয়ারিতে অনেক আয়োজন করে প্রভাতফেরী করে আসলাম।কত রকম মানুষ!নানা বয়সের,নানা ধর্মের।কিন্তু সবার হাতে ফুল,সবার খালি পা!দেখেই অদ্ভুত প্রশান্তি আসলো মনে।সেদিন,আটাশে ফেব্রুয়ারি আবার গেলাম কিছু কৃষ্ণচূড়া নিয়ে শহীদ মিনারে।মনে হয় এটাই যেন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম স্থান যেখানে চিত্কার করে বলবো,"বাংলা আমার,আমি বাংলার"কিন্তু গিয়েই থমকে গেলাম।ভয় পেয়ে গেলাম।শহীদ মিনারের বেদী জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে কিছু প্রাচীণ লাশ।
লাশ,কিন্তু কেমন একটা জীবিত জীবিত ভাব।নাকি জীবিতই?হ্যা জীবিত,খুব অবহেলায় বেঁচে থাকে যারা।চেনা লাগছে মুখগুলো।একটানা চেয়ে রইলাম।একজনকে চেনার চেষ্টা করছি তখনো।তখনি তার পিঠের উপর হাই হিল গেঁথে গেলো।আশ্চর্য!এই মেয়েকে তো সেদিন দেখেছি খালি পায়ে,হাতে ফুল।আজ কি হলো তবে?সে কি অন্ধ?সে দেখতে পাচ্ছেনা সে লাশের উপর দাড়িয়ে?লাশটা কেমন কেঁপে উঠলো।একে একে পাঁচজন দশজন!সংখ্যা বাড়ছে।সবাই লাশগুলোর উপর দিয়ে হেটে যাচ্ছে।আচ্ছা,কেউ ই কি টের পাচ্ছেনা?আরে হ্যা সবাই তো জীবিত।রফিক ভাই!আরে রফিক ভাই এটা।আমি দৌড়ে গেলাম।আমাকে দেখেই রফিক ভাই উঠে দাড়ালেন।বুকে তিনটে প্রকান্ড ফুঁটো।শরীর জুড়ে যন্ত্রনার ছাপ।সালাম ভাই,জব্বার ভাই একে একে সবাই উঠে দাড়িয়ে কাছে এলেন।শুকনো রক্তের রং কৃষ্ণচূড়ার তীব্রতা ছাড়িয়ে।আমি জিজ্ঞেস করলাম,ভাই আপনারা এখানে কেন?
সালাম ভাই বললেন,"তোরাই তো আমাদের শুধু এখানে ফেলে রেখেছিস।আমরা বুকে এতগুলো গর্ত বানিয়েছিলাম তোদের বুক ফুঁড়ে বেড়িয়ে আসা প্রতিটা বর্ণমালায় মিশে যেতে।তোদের বুকে ঠাঁই পেতে।তোরা ঠাঁই দিয়েছিস বটে!বুটের তলায়,লোক দেখানো ফুলের তলায়।আমরা এখানেই পড়ে থাকি।কেউ টেনে নিসনি তো কখনো বুকে!রক্তের চেয়ে জুতো দামি।জানিস,দূর থেকে তোদের খুব মানুষ মানুষ লাগে!"
আমি আর জবাব দিই নি।তারা একে একে সবাই গিয়ে শুয়ে পড়লো আগের মতো।বুটের চাপায় কেমন কেঁপে কেঁপে উঠছে।আশ্চর্য!কেউ দেখছেনা।কেউ বুঝছেনা।
আমি বাংলা ভাল করে লিখতে পারি না কম্পিউটার এ কোন ভুল হলে মাফ করবেন আমাকে আমার পোস্ট পড়ার জন্নে
ধন্যবাদ




_____________
বাত্সরিক একুশ
মোঃ শাহিন সরদার
১৯/০২/২০১৭

No comments

Powered by Blogger.